
ভারতবর্ষ
চোখভরা জল আর বুকভরা অভিমান নিয়ে
কোলের ছেলের মতো তোমার কোলেই
ঘুরে ফিরে আসি বারবার
হে ভারত, জননী আমার।
তোমার উত্সুক ডালে
কখন ফুটেছি কচিপাতার আড়ালে,
আমার কস্তুরী-রেণু উড়ে গেছে কত পথে
দিগন্তে আকাশে ছায়াপথে,
তবুও আমার ছায়া পড়েছে তোমার বুকে কত শত ছেলে
তুমি বাঁকা ঝিরঝিরে নদী ছলছলে
বাজাও স্নেহের ঝুমঝমি,
জননী জন্মভূমি তুমি!তোমার আকাশে আমি প্রথম ভোরের
পেয়েছি আলোর সাড়া,
দপদপে হীরে-শুকতারা
অস্ফুট কাকলি,
জলে ফোটে হীরকের কলি
মধ্যাহ্নে হীরের রোদ—
হে ভারত, হীরক-ভারত!
কোন্ এক ঢেউছোঁয়া দিনে
বঙ্গোপসাগর থেকে পথ চিনে চিনে
কখন এসেছি আমি ঝিনুকের মতো,
তোমার ঘাসের হ্রদে ঝিলের সবুজে
খেলা করি একা অবিরত!
আমি তো রেখেছি মুখ
তোমার গঙ্গোত্রী-স্তনে অধীর উন্মুখ,
মিটাল আগ্নেয় ক্ষুধা তোমার অক্ষয় বটফলে
দিনান্তে সুডৌল জানু মালাবার করোমণ্ডলে
দিয়েছ আমাকে কোল ;
কত জলতরঙ্গের রাত্রি উতরোল
ভরে দিলে ঘুমের কাজলে ;
মিশে গেছি শিকড়ের তন্ময়তা নিয়ে
তোমার মাটির নাড়ি হাওয়া আর জলে
গ্রীষ্ম বর্ষা হেমন্ত শরৎ —
হে ভারত, হীরক-ভারত!
আজ গৌরীশঙ্করের শিখরে শিখরে
জমে কালো মেঘ
বৈশাখী পাখির ডানা ছড়ায় উদ্বেগ ;
তবু এই আকাশ সমুদ্র থেকে কাল
লাফ দেবে একমুখো হীরের সকাল
চকচকে মাছের মতন—
হে ভারত, হীরক-ভারত পুরাতন!
No posts
No posts
No posts
No posts
Comments