মা মরা সাজে's image
Share0 Bookmarks 5 Reads0 Likes

করাতের মতো ধারালো দাঁত দিয়ে ওরা কাঠ চাঁছে,

কোথাও বা খুঁটে খুঁটে পাটকাঠির টুকরো জমায়।

নিজের লালা মিশিয়ে পাকায় বেশ বড় এক গোল্লা,

অতি যত্নে বুকে করে বয়ে নিয়ে গিয়ে বাসা বানায়।

উল্টো ছাতার মতো কভারের তলে ছয়কোনা খোপ,

এক দেয়ালে কাজ চলে দুই খোপের, ঘর গোল নয়।

এই টেকনোলজিতে জায়গার অপচয় নয়,হয় সাশ্রয়!

পেষ্ট বোর্ডের মতো কভারটি বোধহয় ওয়াটারপ্রুফ,

শক্ত পোক্ত বোঁটায় আটকানো থাকে ওদের রুফ।

নজর তীক্ষ্ম, রোদে , জলে শিশুরা যেন কষ্ট না পায় !

কাগজশিল্প নিশ্চিত চালু ছিল ভীমরুলদের দুনিয়ায়,

ভীমরুল বা বোলতা মায়েরা তাদের ছানাদের তরে,

অতি যত্নে এমন শক্তপোক্ত টেঁকসই বাসা বানায়।

কচি,নরম সবুজ শুঁয়োপোকা ধরে ছানাকে খাওয়ায়,

ওদের ছানাপোনা বিশ্বাসে বাঁচে, শুধু মায়ের ভরসায়।

ওদের বাবা কি আর শিশুদের খোঁজ খবর নেয় !

দুর্বল তারা তো আগে চলে যায় সহজেই মৃত্যু শয্যায়।

ছোটো জ্যান্ত পোকা, শিশুর কুঠুরিতে মা জমায়।

পোকাকে অবশ করতে ওদের স্নায়ুতে করে আঘাত।

এরপর দরজা বন্ধ, হবেই কখনও শিশুর প্রভাত।

সকলেই জানে পাখা গজালে আর কেউ কারো নয়,

তাই শীতের আগেই সকলে বাসা ছেড়ে চলে যায়।

কষ্টে শীতে কাতর মাতা, নিজে না খেয়ে মরা সাজে,

জানে, ঐ টুকু শক্তিও লাগে ডিম পুষ্ট হবার কাজে।

মা এভাবেই অনাগত ভবিষ্যতের শিশুদের তরে,

নিজের জীবন বাজি রেখে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে।

কোনোমতে শীতের দুটো মাস নির্বিঘ্নে কেটে গেলে,

ফাল্গুন চৈত্রে যত জমানো আলস্য, সব ঝেড়ে ফেলে।

নতুন উদ্যমে বাসা বানানোর জায়গাটা পছন্দ করে,

বাঁশ,কাঠ,কাগজের কথা মায়ের আবার মনে পড়ে।



No posts

Comments

No posts

No posts

No posts

No posts